Thursday, April 30, 2020

ঢাকা টু সিকিম ভ্রমন (Dhaka to sikkim travel)

অনেক দিন ধরে প্ল্যান ছিল বরফের উপর হাঁটার আর স্নোফল দেখার।তাই আমরা ৪ জন মিলে  ১২ ডিসেম্বর ২০১৯ এ  সিকিমের উদ্দেশে  রওনা  দেই।
*১২/১২/২০১৯  আমরা  গাজীপুর, কোনাবাড়ি  থেকে  সন্ধ্যা  ৭.৩০ মি. হানিফ পরিবহনে গাড়িতে উঠেপড়ি।
*১৩/১২/২০১৯ সকাল ৫.৩০ মি, তেঁতুলিয়া বাজার নেমে যাই,ওখান থেকে ১০ কিঃ মিঃ  দূরে হলো বাংলাবান্ধা বর্ডার   ওপারে হলো  ফুলবাড়ী  বর্ডার। তেঁতুলিয়া বাজার থেকে বর্ডার পর্যন্ত যাওয়ার জন্য  আমরা লোকাল বাসে  উঠে  পড়লাম।
  দুই  বর্ডারের কাজ প্রায়  দুপুর ২.০০ মিঃ  শেষ করে শিলিগুড়ি (এস এন টি)  যাওয়ার জন্য বসে চেপে বসলাম।  ২০-২৫ মিঃ  মধ্যেই  আমরা শিলিগুড়ি পৌছে  যাই।
শিলিগুড়ি  থেকে গ্যাংটক যাওয়ার জন্য আমরা ২০০০ রুপিতে ৪ সিটের একটি টেক্সি  ভাড়া করলাম।আমরা এস এন টি থাকে ভাড়া করা ট্যাক্সি দিয়ে গ্যাংটকের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলাম। তিন থেকে চার ঘন্র মধ্যে
 আমরা রাংপো চেকপোষ্টে পৌছালাম। চেকপোষ্টে যা যা লাগবে তার মধ্যে হলো আমার যে ভিসা ও এন্ট্রি সিল দেওয়া হয়েছে তার এক কপি এবং এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ফটো এবং তাদের দেওয়া ফর্ম, সর্বোচ্চ আধা ঘন্টা লাগতে পারে। আমাদের প্রায় 20-25 মিনিট লেগেছিল। আমরা সাত দিনের জন্য সিকিম থাকার পারমিট পেলাম তারা পাসপোর্টে আমাদের একটা নতুন করে সিকিমে ঢোকার সিল দয়ে দিল।বলে রাখা ভাল সিকিমের যেখানে ঘুরতে যাবেন সেখানকার পারমিট নিতে আপনাকে প্রায় দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি দেওয়া লাগবে অথবা আপনি কতটা স্পটে ঘুরতে যাবেন সে অনুসারে এর দ্বিগুণ ছবি নিয়ে যাবেন। আমার মতে 8 থেকে 10 কপি নয় ভালোকারণ অনেক সময় আপনি পারমিটের জন্য একটা পেপার জমা দিয়েছেন এক এজেন্টের কাছে কিন্তু কোন কারনে ঐদিন আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে আপনি ওই জায়গায় যেতে পারছেন না ঠিক সেই মুহূর্তে যদি আপনি পরের দিন আবার অন্য কোন স্পটে পাসপোর্ট এর জন্য আবার অ্যাপ্লিকেশন করতে হবে আ।যদি ট্রাভেল এজেন্সি চেঞ্জ করেন সেক্ষেত্রে আপনাকে আবার নতুন করে ছবি দিতে হবে এ।ছবি বেশি নিয়ে যাওয়াই ভালো। এরপর আমরা রেংপো থেকে গ্যাংটক এমজি মার্ক আমাদের পৌঁঁছতে সময় লেগেছিল প্রায় এক ঘন্টার একটু বেশি সময় লাগে। আমরা প্রায় রাত আটটার মধ্যে এমজি মার্ক পৌঁছে গেলাম। এরপর আমরা হোটেল নিলাম যার নাম ছিল সানি গেস্ট হাউস এমজি মার্গের একটু নিচে। হোটেল ভাড়া দিন প্রায়  আমাদের কাছে রেখে ছিল 2000 রুপী। প্রত্যেক রুমে চারজন থাকার মত স্পেস ছিল।রাতে হোটেলে কম্পানিয়ে শুয়ে পরলাম তারপরও অনেক ঠাণ্ডা লাগতেছিল কারণ বাহিরে তখন টেম্পারেচার প্রায় 6 ডিগ্রী সেলসিয়াস ৷সকালে উঠলাম পরবর্তীতে আমরা যেহেতু আমাদের প্রথম গন্তব্য ইয়ামথাং ভ্যালি যেতে পারলাম না রাস্তা বন্ধ থাকার জন্য ওই জন্য আমরা ঐদিন গ্যাংটক শহর ঘুরাঘুরি করি ৷এরমধ্যে আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছিল হনুমান টক এবং রুপওয়ে রাইট ৷
সকালবেলা আমরা এমজি মার্ক ঘোরাফেরা করলাম কিছু ছবি তুললাম |সব মিলিয়ে ভালোই লেগেছিল ৷সম্পূর্ণ একটা প্রাকৃতিক পরিবেশ৷এমজি মার্ক সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার এবং মাঝখান দিয়ে বসার মত কিছু ব্রেঞ্চ রয়েছে বসে বিকেলে বঙ্ সন্ধ্যাবেলায় সময় কাটানোর জন্য খুব চমৎকার একটা পরিবেশ৷
পাহাড়ি এলাকা গুলো রাতের বেলায় রাত বিশেষ করে আটটার পর থেকে দোকানপাট বন্ধ করে ফেলে খাবার-দাবারের দোকানও বন্ধ করে ফেলে ৷তাই আমরা দ্রুত রাতের খাবার সাল্লাম এবং হোটেলে ফিরে গেলাম।
পরদিন সকালে আমরা রওনা দিলাম সাঙ্গু লেক এর উদ্দেশ্য ৷ এটা গ্যাংটক থেকে প্রায় 45 কিলোমিটার দূরে ৷পাহাড়ি আঁকাবাঁকা উঁচু-নিচু পথ পেরিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টার মধ্যে আমরা সাঙ্গু লেক পৌঁছে গেলাম ৷আমরা মূলত গিয়েছিলাম যে উদ্দেশ্য সফল এবং সতেজ বরফ দেখার জন্য ৷সেটা প্রায় সফল হয়েছে ৷পাহাড়ের চারদিক সাদা বরফের চাদরে ঢাকা ছিল রাস্তাগুলোও ছিল বরফে ঘেরা ৷রাস্তা থেকে দৃশ্যগুলি অসাধারণ লাগছিল ৷সাঙ্গু লেক টেম্পারেচার সকাল এগারোটার দিকে প্রায় - 01.ডিগ্রী সেলসিয়াস৷প্রচন্ড ঠান্ডা এরকম আবহাওয়াতে আমরা যারা বাংলাদেশি তারা সচরাচর অভ্যস্ত নয় ৷তাই আমি মনে করি ভালো শীতের পোশাক ক্যারি করা দরকার ৷অবশ্য এগুলো আবার ভাড়া পারাস্তাগুলো সাপের মত দেখায়ওয়া যায় ৷আমার অভিজ্ঞতা থেকে আমি বলতে চাই ওই সাঙ্গু লেক এর তবে গিয়ে যখন বরফের উপর দিয়ে হাঁটতে হবে তখন আমাকে যে একটা ভোট পরিধান করতে হবে.সেই দিকে একটু খেয়াল রাখতে হবে অবশ্যই ভোটের ভিতর দুই এর অধিক মুজা পরিধান করতে পারলে সবথেকে ভালো হয় ৷কারণ পায়ের ঠান্ডা টাই সবচেয়ে বেশি লাগে ৷মজার ব্যাপার হলো সাঙ্গু লেক তা মূলত সি লেভেল থেকে 12 হাজার ফুট উপরে ৷এই লেকের সমতল থেকে কেবল কার্ডের মাধ্যমে আমরা আরো দুই হাজার ফিট উপরে উঠলাম ৷সেখানে শুধু পাহাড় আর মেঘ শুধু মেঘ নয় বরফের মেঘ বরফের রাস্তা বরফে সবকিছু ঘেরা ৷ক্যাবল কারে ওঠার জন্য আমরা 360 টাকার বিনিময়ে জনপ্রতি টিকিট কাটলাম ৷কিছুক্ষণের মধ্যেই আমরা আরো দুই হাজার ফুট উপরে উঠে পরলাম ৷সেখান থেকে সমস্ত দৃশ্য স্পষ্ট দেখা যায়৷